Wednesday, April 11, 2012

বাংলাদেশে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) তৈরীর বিস্তারিত তথ্যাবলি


Machine Readable Passport of Bangladesh
বাংলাদেশে এখন চলছে Machine Readable Passport এর যুগ। আমি নিজে সম্প্রতি পাসপোর্ট‍ এর জন্য আবেদন করেছি এবং হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। আপনারাও যারা পাসপোর্ট করতে চাচ্ছেন তাদের জন্যই এই পোষ্ট। নিচে ধাপে ধাপে পাসপোর্ট তৈরির পুরো পক্রিয়াটি দেয়া হল:
১. প্রথমেই আপনাকে চার পাতার Passport form সংগ্রহ করতে হবে। Passport form আপনি আগাঁরগাও পাসপোর্ট অফিসের ২ নং গেট থেকে বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে পারেন। এখান থেকে আপনাকে ১ কপি ফরম দেয়া হবে। এটিকে ফটোকপি করে মোট ২ কপি ফরম আপনার নিকট রাখতে হবে। আপনি ইচ্ছা করলে এখান থেকে বিনামূল্যে ফরম ডাউনলোড করে প্রিন্ট করেও ব্যবহার করতে পারেন।

২. তারপর আপনাকে ঐ ২ কপি Passport form সহীহ্-শুদ্ধভাবে পূরণ করতে হবে। ফরমের সকল অংশ ইংরেজি বড় হাতের আক্ষরে লিখে পূরণ করতে হবে। নিদেশিত জায়গায় আঠা দিয়ে পাসপোর্ট সাইজ ছবি সংযুক্ত করতে হবে। ছবিটি এমনভাবে সত্যায়িত করতে হবে যেন সত্যায়নকারীর স্বাক্ষর এবং সীলমোহর এর অর্ধেক অংশ ছবির উপর আর বাকি অর্ধেক অংশ ফরমের কাগজে থাকে।
৩. সঠিকভাবে ফরম ২টি পূরণ করার পর আপনাকে এর সাথে জন্মনিবন্ধন সনদ / জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সংযুক্ত করতে হবে।
৪. এরপর আপনাকে ১ নং গেট দিয়ে ঢুকে সোজা চলে যেতে হবে সোনালী ব্যাংকের বুথের কাছে। বুথের পাশেই থাকা কোন একজন আনসার সদস্যের নিকট থেকে টাকা জমা দেয়ার রশিদ সংগ্রহ করতে হবে।

রশিদটি পূরণ করে টাকা জমা দেয়ার জন্য বুথের লাইনে দাঁড়াতে হবে। সাধারণ পাসপোর্টের জন্য ৩০০০ টাকা আর জরুরী পাসপোর্টের জন্য ৬০০০ টাকা জমা দিতে হবে। (টাকা জমা দেয়ার সময় আরো ১০ টাকা চায় VAT হিসেবে)।
৫. টাকা জমা দেয়ার পর আপনাকে দেয়া রশিদের অংশে একটি নম্বর লিখে দিবে। এই নম্বরটি আপনার পাসপোর্ট ফরমের ক্রমিক নং ২৫ এ নিদিষ্ট শূন্যস্থানে বসাতে হবে।
৬. এরপর রশিদটি আপনার পাসপোর্ট ফরমের ১ম পাতার উপরের অংশে ডানদিকে আঠা দিয়ে সংযুক্ত করতে হবে।
৭. এরপর আপনাকে আবার চলে যেতে হবে ২ নং গেটে- ফরম ভেরিফিকেশনের জন্য। সেখানে আপনার ফরমের তথ্যাবলির প্রাথমিক যাচাইকরণ করা হবে এবং কয়েক জায়গায় স্বাক্ষর ও সীল দেয়া হবে। বেশি ভুল পাওয়া গেলে আপনাকে আবার ফরম পূরণ করতে বলা হতে পারে। তাই,যথাসম্ভব সতর্কতার সাথে ফরম পূরণ করতে হবে।
৮. প্রাথমিক যাচাইকরণ শেষে আপনাকে আবার যেতে হবে ১ নং গেটে। গেটের ভেতর ঢুকে হাতের বামদিকের সিঁড়ি (তীর চিহ্নিত)বেয়ে চলে যেতে হবে সোজা তিন তলায় (সম্ভবত ৩১০ নম্বর রুম)। সেখানে আপনার ছবি তোলা হবে এবং আপনাকে ডেলিভারি স্লিপ প্রদান করা হবে।

৯. আপনাকে পাসপোর্ট ডেলিভারির তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে। সাধারণত ৩০০০ টাকার সাধারণ পাসপোর্টের জন্য ১ মাস সময় লাগে।
১০. এবার আপনার কাজ মোটামুটি শেষ আর শুরু অপেক্ষার পালা। ফরম জমা দেয়ার ১৮ দিনের মধ্যে আপনার উল্লিখিত ঠিকানায় পুলিশ আসবে ভেরিফিকেশনের জন্য। আপনার সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরও পুলিশ মহাশয়কে খুশি করতে ৫০০-১০০০ টাকা খরচ হবে।
১১. নির্দিষ্ট তারিখে অফিসে গিয়ে ডেলিভারি স্লিপ জমা দিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে এবং সকল তথ্য ভালভাবে চেক্ করে নিতে হবে।
তারপর ভালোয় ভালোয় কোন প্রকার ভুল-ত্রুটি ছাড়া পাসপোর্ট হাতে পেলেই হলো। আপনার এতদিনকার পরিশ্রম সার্থক হলো।
কিছু লক্ষণীয় বিষয়:
• যে কোন সমস্যায় দায়িত্বরত আনসারদের সহায়তা নিন।
• যে কোন সময় ব্যবহারের জন্য স্ট্যাপলার, পিন, আঠা, কলম ইত্যাদি সঙ্গে রাখবেন।
• পুরো ঢাকা নগরীকে তিনটি অধিক্ষেত্রে বিভক্ত করা হয়েছে- উত্তরা, আগারগাঁও, যাত্রাবাড়ী অধিক্ষেত্র। টাকা জমা দেয়ার ক্ষেত্রে যার ঠিকানা যে অধিক্ষেত্রের অন্তগত, তাকে সেই অধিক্ষেত্রের পাসপোর্ট অফিসে টাকা জমা দিতে হবে।
• ছবি তোলার দিন পরিচ্ছন্ন কাপড় পরে যাবেন।

সংগৃহীত পোষ্টটি লিখেছেন টিজে - ThinkBreaker



No comments:

Post a Comment